কক্সবাজার প্রতিনিধি :
জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাইলেও এগিয়ে আসেনি পুলিশ। এমন অভিযোগ করেছেন কক্সবাজারে ধর্ষণের শিকার নারী পর্যটক। গতকাল বুধবার ওই নারী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পুলিশ বলছে, কারো অবহেলা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই নারীর অভিযোগ, ‘৯৯৯-এ ফোন করার পর আমাকে ফোন দেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক কর্মকর্তা। নাম-পরিচয় না বললেও পুরো বিষয়টি তাকে বলি। কিন্তু তিনি আমার কাছে না এসে উল্টো থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা। এতে আমি আরও দুর্বল হয়ে পড়ি। কান্নাকাটি শুরু করি। এক পর্যায়ে হোটেল-মোটেল জোনে বসানো সাইনবোর্ডে র্যাবের নম্বর দেখতে পাই। যোগাযোগ করা হলে তারা দ্রুত এগিয়ে আসে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, জরুরি সেবার জন্য ফোন দিলে তাৎক্ষণিক সাড়া দেওয়ার কথা ছিল পুলিশের, সেটা আমি পেলাম না কেন?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীরুল গিয়াস বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি দেখছি। কারও গাফিলতি থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম জানান, ‘জরুরি সেবা ৯৯৯-এ সার্বক্ষণিক মোবাইল টিম মাঠে থাকে। আমরা সব সময় কল পেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে সহযোগিতা করে থাকি। তবে এই ঘটনায় কারও গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকার বলেন, ইতোমধ্যে আমরা একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। আরও দুইজনকে আটকের চেষ্টা চলছে।
ধর্ষণের শিকার নারী র্যাবকে জানান, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে শিশু সন্তান নিয়ে কক্সবাজার পৌঁছান ওই নারী ও তার স্বামী। সন্ধ্যায় সমুদ্র সৈকত থেকে উঠে আসার সময় ভিড়ের মাঝে কয়েকজন যুবকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তার স্বামীর। পরে তাদের কাছে ক্ষমা চান ওই নারীর স্বামী। কিন্তু কৌশলে স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া বাঁধায় ওই যুবকরা। পরে ধাক্কাধাক্কি করে ওই নারীর কাছ থেকে স্বামী-সন্তানকে আলাদা করে ফেলে তারা। এক পর্যায়ে ছুরি দেখিয়ে এবং স্বামীকে হত্যা করার ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে সিএনজি করে শহরের নির্জন স্থানে নিয়ে যায় তারা। সেখানে তিনজন মিলে তাকে ধর্ষণ করে।
এরপর দ্বিতীয় দফায় কক্সবাজারের জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে নিয়ে আবারও ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে হোটেলের কক্ষ বাইরে থেকে বন্ধ করে চলে যায় ধর্ষকরা।
পরে জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে ডেকে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খোলেন ওই নারী। তারপর ফোন দেন ৯৯৯-এ।