বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) সাবেক প্রধান প্রকৌশলী (নির্মাণ ও প্রকৌশল) এবং প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তৌহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরি গ্রহণ, সরকারের অনুমোদন ছাড়া গাড়ি কেনা, ব্যবহার, কনসালট্যান্ট নিয়োগ, চুক্তি স্বাক্ষর এবং কাজ না করেই বিল উত্তোলনের মাধ্যমে ৩৯ লাখ ৮০ হাজার টাকাসহ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম। দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪০৯, ৪১৭, ৪২০, ৪৬৫, ৪৬৭, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় (সজেকা) ১ এ বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১১ সালের ২ মার্চ বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। এরপর আসামি মো. তৌহিদুজ্জামান ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে ৫ নম্বর ক্রমিকের যোগ্যতা অনুসারে দরখাস্ত না করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করেন। পরে নিয়োগ পাওয়ার জন্য যথাসময়ে আবেদন না করে করপোরেশনের অসৎ কর্মচারীদের যোগসাজশে পরবর্তীতে দরখাস্ত জমা দেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে নিয়োগের জন্য যে সব শর্ত বা যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল সেই সব যোগ্যতার কোনোটাই তার ছিল না। তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনও সনদপত্র জমা দেননি। তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র তৈরি করে দরখাস্ত জমা দেন।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে প্রার্থীদের বয়সসীমা ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি তারিখে ৪২ বছর হতে হবে। কিন্তু ওই সময় তার বয়স হয়েছিলো ৪৪ বছর। প্রকৃত সত্য গোপন রেখে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জাল কাগজপত্র তৈরি করে চাকরিতে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে তিনি প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে পদোন্নতি পান।
মো. তৌহিদুজ্জামান অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনে যোগদানের পর থেকেই প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে পদায়ন হয়। তিনি প্রগতি টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। বিধি লঙ্ঘন করে গাড়ি কেনা, ব্যবহার, কনসালটেন্ট নিয়োগ, চুক্তি স্বাক্ষর ও কাজ না করা সত্ত্বেও বিল দেওয়া বাবদ কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। উত্তরার তিন নম্বর সেক্টরের ১০ নম্বর সড়কের ৯ নম্বর বাড়িতে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ক্রয় এবং নামে-বেনামে কানাডাতে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের নামে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন।