বাংলার চোখ স্বাস্থ্য সংবাদ :
” ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মধু ” !!! অনেক রোগীরাই চেম্বারে এসে জিজ্ঞেস করেন আমরা মধু খেতে পারব কিনা ?.. আবার কিছু রোগী জিজ্ঞেস করেন যে আমরা চিনির পরিবর্তে মধু ব্যবহার করতে পারব কিনা ?.. আসুন নিচের বর্ণনা থেকে এগুলোর উত্তর বোঝার চেষ্টা করি…. ডায়াবেটিস ও মধু নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা হয়েছে বিভিন্ন ল্যাবরেটরীতে বিভিন্ন প্রাণীর উপর ,তার মধ্যে কিছু সংখ্যক গবেষণা হয়েছে মানুষের উপর. এর মধ্য থেকে তুরস্কে একটি গবেষণা হয়েছে, যেখানে টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদেরকে প্রতিদিন 5 থেকে 25 গ্রাম মধু প্রায় চার মাস খাওয়ানো হয়েছে ,ফলে তাদের হিমোগ্লোবিন এওয়ান সি(HbA1c), যা দিয়ে আমরা বিগত তিন মাসের গড় ডায়াবেটিস বুঝে থাকি, তা পূর্বের চেয়ে কিছুটা কমেছে. আসুন এখন জেনে নেই এক চামচ মধুতে কি কি থাকে- #64 ক্যালোরি শক্তি #17 গ্রাম চিনি #0.06 গ্রাম প্রোটিন #0.04 গ্রাম ফাইবার # এছাড়াও থাকে কিছু ভিটামিন ও মিনারেল যেমন- ক্যালসিয়াম ,পটাসিয়াম, জিংক ও ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস. অতএব সাদা চিনি ও মধুর মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে ,মধুতে উপরোক্ত উপাদান গুলো বিদ্যমান কিন্তু সাদা চিনিতে এই ধরনের ভিটামিন ,মিনারেল বা এন্টি অক্সিডেন্ট বিদ্যমান নয়. এছাড়াও
মধুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স(GI) 58 এবং চিনির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স(GI) 60 , মধুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কিছুটা চিনি থেকে কম, একটি খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স দিয়ে আমরা বুঝি, ওই খাবারটি রক্তে চিনির মাত্রা কতটুকু দ্রুত বৃদ্ধি করতে পারে অর্থাৎ সাদা চিনি থেকে মধু রক্তে চিনির মাত্রা কিছুটা হলেও ধীরে বাড়ায়. মধুর এন্টি ইনফ্লামেটরি এবং এন্টি অক্সিডেন্ট গুন আছে তা সত্ত্বেও সকল বিশেষজ্ঞরা ডায়াবেটিস রোগীদের মধু ব্যবহারে একমত নন ,কারণ তারা অনেকেই ব্যাখ্যা করেছেন, অন্যান্য বিভিন্ন খাবার আছে যাতে এই ধরনের এন্টি ইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলী আছে , কিন্তু তারা রক্তের চিনির পরিমাণ বাড়ায় না. তবে সর্বশেষ ও সহজ কথা হচ্ছে, যদি আপনার ডায়াবেটিস ভালোভাবে কন্ট্রোলে থাকে ,তাহলে আপনি আপনার খাবারের ক্যালরি হিসাব করে, কিছু পরিমাণ মধু আপনার খাবার সাথে যুক্ত করতে পারেন, তবে অবশ্যই সেই মধু হতে হবে সম্পূর্ণ ন্যাচারাল বা অপরিশোধিত অর্থাৎ কোনো অতিরিক্ত চিনিযুক্ত হওয়া যাবে না এবং অবশ্যই তা আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হতে হবে. – রোটারিয়ান ডা. আল ওয়াজেদুর রহমান, বিশিষ্ট চিকিৎসক, সংগঠক ও লেখক. পরিচালক, সিদ্ধিরগঞ্জ ডায়াবেটিস সেন্টার.