নারায়ণগঞ্জ সদরের খানপুর পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। শনিবার রাত পর্যন্ত দগ্ধ ৩৭ জনের মধ্যে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২৭ জনের মৃত্যু : বাইতুস সালাত জামে মসজিদে গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১ জনে দাঁড়িয়েছে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। তারা হলেন- মোস্তফা কামাল (৩৪), নারায়ণগঞ্জ কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রিফাত (১৮), গার্মেন্টকর্মী মো. রাসেদ (৩০), দুই সন্তানের জনক হুমায়ুন কবির (৭০), গার্মেন্টকর্মী ইব্রাহীম বিশ্বাস (৪৩), জুয়েল, সাব্বির (২১), মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. দেলোয়ার হোসেন (৪৮) ও তার সন্তান জুনায়েদ (১৭), চাকরিজীবী মো. জামাল আবেদিন (৪০), কুদ্দুস ব্যাপারী (৭২), পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিন (১২), জয়নাল (৫০), কাঞ্চন হাওলাদার, গার্মেন্টকর্মী নয়ন, ৭ বছরের শিশু জুবায়ের, ওয়ার্কশপ শ্রমিক রাসেল (৩৪) ও মো. বাহাউদ্দিন (৫৫), মো. মিজান (৪০), মসজিদের ইমাম আবদুল মালেক নেসারি (৫৫) ও ফটো সাংবাদিক নাদিম হোসেন (৪৫)। মৃতদেহগুলো সবুজবাগ মাঠে নেয়া হয়। সেখান থেকে হস্তান্তর করা হয় স্বজনদের কাছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যারা : বার্ন ইন্সটিটিউট সূত্র জানায়, দগ্ধদের মধ্যে মো. রাসেলের শ্বাসনালিসহ শরীরের শতভাগ ও আবদুল আজিজের ৪৭ ভাগ পুড়ে যায়। এছাড়া মো. রাসেলের শরীরের ৮০ ভাগ, জয়নালের ৯০ ভাগ, কুদ্দুস ব্যাপারীর ৯০ ভাগ, ইব্রাহীমের ৯২ ভাগ পুড়ে গেছে। তাদের প্রত্যেকের শ্বাসনালি দগ্ধ হয়েছে। বার্ন ইন্সটিটিউটের সহকারী পরিচালক ডা. হুসেইন ইমাম বলেন, দগ্ধদের সবার শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। তাদের শরীরের কমপক্ষে ৩০ শতাংশের বেশি দগ্ধ হয়েছে।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, যারা ভর্তি আছেন, তারা কেউ শঙ্কামুক্ত নন। তাদের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ বলা যায়। কয়েকজনের শরীর কম পুড়লেও শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ায় অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম যুগান্তরকে বলেন, দগ্ধদের চিকিৎসায় কোনো গাফিলতি হচ্ছে না। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
স্বজনদের জন্য সহায়তা কেন্দ্র ও হটলাইন : আহত ও নিহতদের আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। স্বজনরা এখান থেকে সব ধরনের তথ্য ও সহযোগিতা পাবেন। এছাড়া মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে সহায়তা দিতে স্বজনদের জন্য একটি হটলাইন খুলেছে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়- মরদেহ গ্রহণ ও হস্তান্তরের জন্য স্বজনদের ০১৭৩২-৮৯২১২১ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।