মোঃ ফারুক হোসেন :
নওগাঁর বদলগাছীতে চিকিৎসাধীনরত মহিলা রোগীর সাথে কর্তব্যরত ডাক্তারের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বদলগাছী সদর ইউপির জিধিরপুর গ্রামের জনৈক মিঠু হাসানের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার (৩৩) গত ৩ ফেব্রুয়ারি তার প্রতিবেশীর দ্বারা আহত হলে ঐ দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বদলগাছীতে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসারত অবস্থায় ইয়াসমিন আক্তার এর মাথার একটি সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত ডাক্তার মোহাম্মদ আল মামুন দেওয়ান।
ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ভর্তি থাকা অবস্থায় ৬ই ফেব্রুয়ারি আমাকে ডাক্তার একটি সিটি স্ক্যান পরিক্ষা করার জন্য পরামর্শ দেন এবং আমার স্বামী মিঠু হাসান বদলগাছীতে কোনও সিটি স্ক্যান পরিক্ষার মেশিন না থাকায় আমাকে নিয়ে নওগাঁর প্রাইম ল্যাবে নিয়ে যায়। সেখান থেকে সিটি স্ক্যান করিয়ে আসলে গত ৭ই ফেব্রুয়ারি সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে ডাক্তার মোহাম্মদ আল মামুন দেওয়ান রোগী দেখতে রাউন্ডে আসলে আমি ডাক্তারকে আমার সিটি স্ক্যান রিপোর্ট দেখতে দিলে রিপোর্টটি হাতে নিয়ে আমার মুখ বরাবর ছুঁড়ে মারেন এবং বলেন “এই ল্যাব থেকে রিপোর্ট করেছেন কেন। ল্যাব এইড থেকে সিটিস্ক্যান করতে বলা হয়েছিল সেখানে করেন নাই কেন” বলে রিপোর্টটি না দেখেই রাগান্বিত হয়ে তিনি চলে যান।
সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানকালে পার্শ্ববর্তী বেডের রোগী পিংকি’র সাথে এ ব্যাপারে কথা বললে তিনি বলেন, ১৯নং বেডের রোগীর সিটিস্ক্যান রিপোর্ট হাতে নিয়ে রাগারাগি করে রিপোর্টটি ডাক্তার ফেলে দেয় এবং আমার রিপোর্টটিও ফেলে দেন এবং অন্য রোগীর সাথেও খারাপ ব্যবহার করে কোনও পরামর্শ না দিয়েই চলে যান ডাক্তার আবদুল্লাহ আল মামুন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রোগী এবং হাসপাতালের স্টাফ বলেন, সমাজসেবা অফিসের প্রতিবন্ধী জরিপ ফরমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা স্বাক্ষর নিতে আসলেও ডাক্তার মোহাম্মদ আল মামুন দেওয়ান বিড়ম্বনাসহ দুর্ব্যবহার করেন।
ডাক্তার মোহাম্মদ আল মামুন দেওয়ান এর সাথে এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, রোগীর সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়নি। তবে সামান্য ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে মাত্র। প্রতিবন্ধী জরিপ ফরমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা স্বাক্ষর নিতে আসলে তাদের সাথেও আপনি দুর্ব্যবহারের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকেই অন্যায় আবদার নিয়ে আসে। আমি একজন ডাক্তার হিসেবে সবাইকে তো প্রতিবন্ধী হিসেবে শনাক্ত করতে পারি না। তাই অনেকেই মন খারাপ করে এর বাহিরে কিছু না।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ কানিজ ফারহানা বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ কখনো অভিযোগ করেনি। আর এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সর্বপ্রথম আমারই জানার কথা। এই প্রথম আপনার কাছে জানতে পারলাম। তবে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরূদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
//এমটিকে