সম্পাদকীয় :
এক সময়ের মঙ্গা আক্রান্ত রংপুর অঞ্চল এখন উদ্বৃত্ত খাদ্যের অঞ্চল হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১০ সালে রংপুরকে বিভাগ ঘোষণা করে এবং অবকাঠামো উন্নয়নসহ রাস্তা-ঘাট তৈরি করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছে। এক ভবন থেকে সরকারি সব সেবা প্রদান করার লক্ষ্যে গত ১৬ জানুয়ারি সকালে রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তর কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে রংপুর অঞ্চলের আগের অবস্থা ও বর্তমান সুযোগ-সুবিধার কথা বলেন। রংপুর বিভাগীয় মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী সব উন্নয়ন এ্যাজেন্ডা বাস্তবায়িত হচ্ছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০১০ থেকে ২০২০ প্রেক্ষিতে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি অর্জন সম্ভব হয়েছে। এখন লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা। সেই লক্ষ্যে পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং বাস্তবায়িত হচ্ছে। বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রা কেউ ঠেকাতে পারবে না।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের কল্যাণে-নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়া। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের ভার তুলে নিয়েছেন তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। তার গৃহীত পদক্ষেপে মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, বেড়েছে ক্রয়ক্ষমতা। মানুষ সচ্ছল হচ্ছে। মানুষের এ উন্নয়ন যেন টেকসই হয়, সেজন্য সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। দারিদ্র্যতার কারণে এ দেশের মানুষ যেন আর কষ্ট না পায়। শেখ হাসিনার প্রত্যয় হচ্ছে, একটি আধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর জাঁতি গড়ে তোলা এবং উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তর করা। সেজন্য যেগাাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা হয়েছে। ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক চার লেন থেকে ছয় লেন করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগীয় সড়ক চার লেন থেকে ছয় লেন করা হচ্ছে। সব বিভাগে ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রযুক্তি নির্ভর জাঁতি গঠন করতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। দেশের সব টিভি চ্যানেলগুলো তা ব্যবহার করছে। অন্যদিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা ইউনিয়ন পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এখন সারা দেশের মানুষ গোটা বিশ্বকে হাতের মুঠোয় পাচ্ছে।
বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি এখন সারা বিশে^র রোল মডেল। শেখ হাসিনা সরকার দেশে রেশ কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। নিজেদের টাকায় নিজেদের পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। রাজধানীর গণ-পরিবহনকে উন্নত করতেন মেট্রো-রেল প্রকল্প এগিয়ে চলেছে। বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের কাজও খুব শীঘ্রই শুরু হচ্ছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করায় দেশী-বিদেশী বিনেয়াগকারী বাড়ছে। এজন্য একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হয়েছে। এসবের কাজ শেষ হলে দেশে কর্মসংস্থান বাড়বে। করোনা মহামারিকেও মোকাবেলা করা হচ্ছে খুব দক্ষ হাতে। মূলত: ধারাবাহিক সরকারে থাকা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে কাক্সিক্ষত অর্থনৈতিক মুক্তির পথ প্রশস্ত হয়েছে। আর বেশি দুরে নয়, যখন বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসেবে বিশে^র বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। সময় এখন বাংলাদেশের। তাই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। আসবে জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি। আমরা সেই দিনের অপেক্ষায় আছি।
//এমটিকে