চলতি বছরে লক্ষ্মীপুরে টমেটোর ব্যাপক চাষ হয়েছে। আবহাওয়ার তারতম্য থাকলেও টমেটোর ফলন হয়েছে বেশ ভালো। জেলাবাসীর চাহিদা মিটিয়ে এখন ঢাকা-চট্টগ্রামসহ অন্যান্য জেলায়ও যাচ্ছে এখানকার উৎপাদিত টমেটো। তবে টমেটো সংরক্ষণের জন্য এ অঞ্চলে নেই কোনো হিমাগার।
এতে করে আশানুরুপ দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। দাম না পাওয়ায় চাষিদের মুখে এখন হাসি নেই। এজন্য তারা হিমাগার নির্মাণের দাবি জানান। হিমাগার নির্মাণের উপর জোর দিচ্ছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগও। বলছেন জেলায় প্রতি বছর ৪৫ কোটি টাকার টমেটো উৎপাদন হলেও হিমাগার না থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা।
সরেজমিন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ, চরভুতা, কালিরচর গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে বিস্তৃীণ এলাকাজুড়ে টমেটোর বাগান। সবুজে ছেয়ে গেছে মাঠ। গাছে গাছে টমেটোর ফুল আর থোকায় থোকায় ঝুলছে টমেটো। কেউ বাগানের যত্ন নিচ্ছেন কেউবা রোগ বালাই প্রতিরোধে ছিটাচ্ছেন কীটনাশক আবার কেউ টমেটো বাজারজাত প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জানা যায়, এসব এলাকার পাশাপাশি টমেটো চাষ হয় জেলার কমলনগর, রামগতি ও রায়পুরেও। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে এবার ৫৫০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে, যার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫১০ হেক্টর জমি। গত বছর চাষ হয়েছে ৪১০ হেক্টরে। লাভজনক হওয়ায় টমেটো চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। উন্নতমানের বিজলী, মানিক রতন, সুবলা, লাভলী জাতের টমেটো চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন তারা। এখানকার টমেটো সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যা জেলাবাসীর চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ অন্যান্য জেলায়ও যাচ্ছে এখন।
মাঠে ব্যস্ত এমন কয়েকজন কৃষক জানান, গত কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলে টমেটোর ভালো ফলন হয়। কিন্তু আশানুরুপ দাম পাচ্ছেন না তারা। এক একর টমেটো চাষে খরচ হয় ৪০-৫০ হাজার টাকা। আয় হয় ৮০-৯০ হাজার টাকা। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা দরে। এসব টমেটো সংরক্ষণে কোনো হিমাগার নেই। এতে করে টমেটো চাষে হিমাগার থাকলে কয়েক দিন টমেটো সংরক্ষণ করে বিক্রি করলে তারা আরো বেশি লাভবান হতেন বলে জানান।
লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. বেলাল হোসেন খান জানান, টমেটোর বাম্পার ফলনে দিন দিন টমেটো চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। এবার জেলায় উৎপাদিত টমেটোর বাজার মূল্য ৪৫ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তবে এখানে হিমাগার না থাকায় তারা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে হিমাগার নির্মাণ করা হলে এ জেলার সবজি উৎপাদন আরো অনেকটা বাড়বে।