একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মাওলানা শফি উদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড, তিনজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও অপর আসামি সাব্বির আহমেদকে খালাস দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিরা হলো- মো. তাজুল ইসলাম (৮০), মো. জাহেদ মিয়া (৬২) ও ছালেক মিয়া। আসামিদের মধ্যে মাওলানা শফি উদ্দিন ও সাব্বির আহমেদ এখনও পলাতক।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলায় ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান ও গাজী মো. এমএইচ তামিম।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো হলো:
দুই. ১৯৭১ সালের ৩১ অক্টোবর রাত ৩টার সময় আসামি মাওলানা মো. শফি উদ্দিন, মো. তাজুল ইসলাম ও মো. জাহিদ মিয়া তাদের সঙ্গীয় অন্যান্য রাজাকার ও একদল পাকিস্তানি আর্মি নিয়ে লাখাই থানাধীন মুড়িয়াউক গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা মো. ইলিয়াস কামালের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ বাবা মো. ইদ্রিস মিয়াকে অপহরণ করে হাত-পিঠমোড়া করে বেঁধে নিয়ে একই গ্রামের শান্তি কমিটির সদস্য ইসমাইল মাওলানার বাড়িতে নিয়ে আটক ও নির্যাতন করে।
একই সময় আসামি মো. শফি উদ্দিন, মো. তাজুল ইসলাম ও মো. জাহিদ মিয়া তাদের সঙ্গীয় অন্যান্য রাজাকার ও একদল পাকিস্তানি আর্মি নিয়ে লাখাই থানাধীন মুড়িয়াউক গ্রামের আব্দুল জব্বারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহানকে খোঁজাখুঁজি করে কিন্তু তাকে না পেয়ে তারা মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহানের বৃদ্ধ বাবা আব্দুল জব্বারকে অপহরণ করে একই গ্রামের শান্তি কমিটির সদস্য ইসমাইল মাওলানার বাড়িতে আটক ও নির্যাতন করে। একই দিন বিকেলে ওই রাজাকার ও পাকিস্তানি আর্মিরা অপহৃত ইদ্রিস মিয়া ও আব্দুল জব্বারকে নৌকাযোগে লাখাই থানাধীন (আসামি মো. শফি উদ্দিন মাওলানার বাড়ির নিকট) উজাদার বিলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে মরদেহ পানিতে ফেলে দেয়।