চারদিকে অথই পানি। কোথাও লাশ দাফন করার শুকনো জায়গাটুকুও নেই। বাধ্য হয়ে মায়ের লাশ কলার ভেলায় ভাসিয়ে দিয়েছেন ছেলে। কিন্তু দাফন তো হতে হবে মায়ের। তাই লাশের সঙ্গে তিনি চিরকুট লিখে দেন। তাতে লেখা– ‘শুকনো জায়গায় মাকে কবর দিও’। ভেলায় লাশ ভাসিয়ে মৃতের পরিবারের সদস্যরা নীরবে চোখের জল ফেলেন। তাদের আশা, কোনও সহৃদয় ব্যক্তি লাশ পাওয়ার পর দাফনের ব্যবস্থা করবেন।
রবিবার বন্যাদুর্গত সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকায় এমন হৃদয়-বিদারক ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন হাওর উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি কাশমির রেজা।
তিনি আরও বলেন, ‘হাওরে অমানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মানুষ দাঁড়ানোর মতো এক ইঞ্চি শুকনো জায়গাও নেই। এর মধ্যে দুর্গত অনেক এলাকায় এখনও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছেনি। মধ্যনগর, তাহিরপুর, ধর্মপাশা, শাল্লা এলাকা খুবই দুর্গত। ওইসব এলাকায় যাতায়াত খুবই কষ্টকর, তাই লোকজন সেখানে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন না। আর একশ্রেণির নৌকার মাঝি সিন্ডিকেট করে ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন। তারা এক হাজার টাকার জায়গায় ১০ হাজার টাকা নিচ্ছেন। ত্রাণসামগ্রী বিতরণসহ নৌকার মাঝিদের নৈরাজ্য দূর করতে প্রশাসনের তদারকি বৃদ্ধি করা জরুরি।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির বলেন, ‘আমার এলাকায় সবকটি ইউনিয়ন ও গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। কবরস্থানগুলো তলিয়ে গেছে। লাশ দাফন না করে ভাসিয়ে দেওয়ার তথ্য আমাদের কাছে নেই।’ তবে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলার চোখ নিউজ